প্রবন্ধ-নিবন্ধ

20120903124715

শেকড় সন্ধানী লেখক গবেষক

সৈয়দ মোস্তফা কামাল জীবনের শেষ বাঁকে

শাহ নজরুল ইসলাম

২৩ অক্টোবর ২০১৩ বুধবার দৈনিক সিলেটের ডাকের একটি ছোট্ট খবরের উপর চোখ আটকে গেল, খবর পড়ে অন্তরাত্মা কেঁপে উঠলো। সৈয়দ মোস্তফা কামাল গুরুতর অসুস্থ, জবান বন্ধ। তাঁর উপশহরস্থ বাসার ল্যান্ড ফোনে বার কয়েক যোগাযোগের চেষ্টা করলাম; কিন্তু সাড়া পেলাম না। মনটা ভারি হয়ে থাকলো । তাঁর সাথে বহু স্মৃতি ভীর জমাতে থাকলো দিনময়। সৈয়দ মোস্তফা কামাল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা থাকার সুবাদে আমাদের কলিগ ছিলেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইসলামী বিশ্বকোষ বিভাগের পরিচালক মাওলানা হাবীবুল মতীন সরকার এক সরকারী সফরে সিলেট এসেছিলেন। তাঁকে খবর জানাতেই তিনিও দেখতে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলেন। সারা দিন নানা ব্যস্ততা ছিল। বাদ মাগরিব আমরা তাঁেক দেখতে গেলাম। সাথে ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন সিলেটের উপ পরিচালক জনাব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন সুনামগঞ্জের উপ পরিচালক জনাব আবু সিদ্দিকুর রহমান।
সৈয়দ সাহেবের কনিষ্ট পুত্র ডা. সৈয়দ মোস্তফা মুবিন আমাদেরকে তাঁর কে নিয়ে গেলেন। সৈয়দ সাহেবের মেয়ে স্ত্রী ও পুত্রবধূরা তার পাশে বসে কুরআন তিলাওত করছিলেন, তারা বের হয়ে গেলেন। আমরা তাঁর কে ঢুকে সালাম দিলাম, কোন সাড়া নেই। মুবিন জানালেন বাসায় রেখেই চিকিৎসা চলছে। উত্তর দেিণ সুজা চিত হয়ে শুয়ে আছেন, মুখ একটুখানি খোলা। মুখের আবয়ব ভেঙ্গে পড়েছে। আমি তাঁর শিয়রের পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে পরিচয় দিলাম ঠুঠ মুখ একটু নড়ে উঠলো, কিন্তু কোন শব্দ হলো না। ইসলামিক ফাউন্ডেশন সিলেটের উপ পরিচালক জনাব ফরিদ উদ্দিন আহমেদও চেষ্টা করলেন একই অবস্থা হলো। আমার খুব মনে পড়লো যে একবার তাঁকে তাঁর অন্তীম ইচ্ছার কথা জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেছিলেন ঈমানের সাথে মৃত্যুই তাঁর অন্তীম ইচ্ছা। আমরা তাঁর ছেলেকে কিছু পরামর্শ ও শান্তনা দিয়ে দু’আ করে বের হয়ে পরলাম।
আসার পথে তাঁর জীবনের অনেক স্মরণীয় ঘটনা আলোচনা করছিলাম। পরদিন পত্রিকায় দেখলাম তাঁকে সুবহানীঘাটস্থ ইবনে সীনা হাসপাতালে সিসিইউ ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। আজ ২৮ অক্টোবর  ফোনে জানলাম যে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। খবরটি শুনে স্বস্তি পেলাম।  তিনি এখন কথা বলছেন। সৈয়দ মোস্তফা কামাল যিনি সিলেট শরীফে আসেন ১৯৬১ সালে। এরপর থেকে বিগত অর্ধ শতাব্দীকাল এ অঞ্চলের শিা সাহিত্য সংস্কৃতিক ইতিহাস চর্চা গবেষণা ও মনন চর্চায় এবং গণমাধ্যমে তাঁর সরব উপস্থিতি ছিল। এসব েেত্র তাঁর অবদান ইর্ষনীয়। তিনি নানা বিষয়ে ৬৩ টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। কবিতা, ছড়া, জারি ও সারি গান, হামদ্ না’ত, রম্যরচনা, নাটক, মরমী সাহিত্য ও ইতিহাস গবেষণায় তাঁর অবদান অসাধারণ। স্পষ্টভাষী সৈয়দ মোস্তফা কামাল শিকতা দিয়ে কর্মজীবনের সূচনা  করলেও তিনি মানব কল্যাণের বহুমুখী কর্ম তৎপরতায় জড়িয়ে পড়েন। তিনি একজন সুবক্তা, মর্দে মুজাহিদ ও সমাজ সেবক হিসেবেও ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। ভরা মজলিসে অকপটে সত্য প্রকাশে তাঁর চেয়ে সাহসী ও পটু মানুষ আমি আর দেখিনি। ইসলামের প্রচার প্রসারে এবং ইসলামী সংকৃতির উজ্জীবনে তিনি অবিস্মরণীয় ভূমিকা রাখেন।
জালালাবাদ লোকসাহিত্য পরিষদ সিলেট এর সাধারণ সম্পাদক, লেখক গবেষক হারূন আকবর সৈয়দ মোস্তফা কামাল এর মূল্যায়ণ করতে গিয়ে লিখেছেন, “ভারতীয় মুসলমানদের মন মেজাযে দু-ধরনের আনুগত্য ক্রিয়াশীল; ভারতের প্রতি আনুগত্য এবং ইরানী মুসলিম সংস্কৃতির প্রতি আনুগত্য। ভারতীয় সভ্যতা, সংস্কৃতি, ইসলামী ও ভারতীয় উপাদানে গঠিত যৌগিক পদার্থ নয়; ওহফরধ ধহফ ওংষধস যধাব ভধরষবফ ঃড় পড়হয়ঁবৎ বধপয ড়ঃযবৎ. এই দু-ধরনের উপাদানের সহ অবস্থানের ফলে ভারতীয় সভ্যতার দেহ ও আত্মা গড়ে উঠেছে। ইসলাম ও হিন্দু সভ্যতার ঐতিহাসিক দ্বন্দ্বের মূলে আছে একটি প্রচ্ছন্ন আদর্শগত বৈষম্য। ভারতীয় ধর্ম ও সংস্কৃতি ভৌগোলিক পরিধির মধ্যে সীমিত জাতীয়তার ভিত্তিতে গঠিত। ইসলামিক ধর্ম ও সভ্যতা এ ধরনের জাতীয়তার সম্পূর্ণ বিরোধী। আন্তর্জাতিকতা ও আন্তর্দেশিকতা ইসলামী সভ্যতার একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য।’ ভারতে ইসলাম পরিপূর্ণভাবে আচরিত হয়নি, ইসলামও ভারতের গভীরে স্বকীয়তা হারায়নি। ভারতের দুই বৃহৎ সম্প্রদায়ের মধ্যে আদর্শগত পার্থক্য থেকে যায়। দীর্ঘপথ পরিক্রমায় দেখা গেছে রাজনীতির মতো সাহিত্যের েেত্রও স্বাতন্ত্র্যবোধ প্রবল হয়েছে। সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চায় দু-ধারা চলমান রয়েছে। সাহিত্য সংস্কৃতিচর্চায়ও ধর্মীয় প্রভাব পরিহারযোগ্য ছিল না। ভারতীয় ও বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের স্লোগান শত প্রচেষ্টায় এ ব্যবধান মিটাতে পারেনি। মিলনের দ্বার প্রান্তে এসেও স্বাতন্ত্র্যবোধ ফিরে দাঁড়িয়েছে। পৌত্তলিক সংস্কৃতি পুষ্ট হিন্দু সমাজ ও জাতীয়তাকে সামনে রেখে অজস্রধারায় কাব্য, নাটক, উপন্যাস রচিত হলেও তাতে মুসলমানদের উপস্থিতি বা অংশীদারিত্ব তেমন ছিল না। ঐ সময়ে রচিত পুথিসাহিত্যকে বাদ দিলে মুসলমান রচিত সাহিত্য শুধু অপ্রতুলই নয়; বরং একেবারে শূন্যের কোঠায় ছিল। উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে হিন্দু সমাজে ব্যাপক সাহিত্যচর্চার বিপরীতে মুসলিম কবি সাহিত্যিকদের আবির্ভাব ঘটলেও তা আদর্শিক গণ্ডির ভেতরে সীমিত ছিল। ধর্মীয় সংস্কৃতির প্রভাব এড়ানো ছিল একেবারেই অসম্ভব। কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় ‘বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতি’ ঢাকায় গড়ে ওঠে ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’ সিলেটে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ’। কারণ ঐ সময়ে মুসলিম সমাজ কিছুটা আত্মসচেতন হয়ে ওঠে। মুসলমানগণ আধুনিক চিন্তা চেতনায় সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। গদ্যে মীর মশাররফ হোসেন ও কাব্যে কায়কোবাদ আর্বিভূত হন। বিশ শতকের প্রথম ভাগেও তারা ছিলেন সক্রিয়। তারা ইসলাম ধর্ম, ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিা, আদর্শকে তাদের লেখায় উপস্থাপন করতে থাকেন। তাদের লিখা মুসলিম সমাজে জাগরণ তোলে। আবেগ উচ্ছ্বাস আনন্দে মুসলিম সমাজ আত্মানুসন্ধানী হয়ে ওঠে। একই ধারায় আসতে থাকেন আরো অনেক। এ পর্যায়ে কাজী ইমদাদুল হক, এস. ওয়াজেদ আলী, ইসমাইল হোসেন সিরাজী, নজিবুর রহমান সাহিত্যরতœ, মোতাহের হোসেন চৌধুরী, কাজী নজরুল ইসলাম, ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ, গোলাম মোস্তফা প্রমুখের নাম স্মরণযোগ্য। তালিম হোসেন, আহসান হাবীব, ফররুখ আহমদ একই ধারাবাহিকতার ফসল। এ ধারা এখনও শেষ হয়নি, স্রোত প্রবল না-হলেও প্রবাহমান। এ ধারারই একজন শক্তিমান সাহসী লেখক সৈয়দ মোস্তফা কামাল। সিলেটের লব্ধ প্রতিষ্ঠিত লেখক গবেষক। তিনি আঞ্চলিক হয়েও জাতীয় চেতনায় সমৃদ্ধ সজীব সক্রিয় সচেষ্ট। ঐতিহ্য সচেতন তথ্যানুসন্ধানী এ লেখক কৈশোর থেকে সাহিত্যচর্চায় নিমগ্ন হয়ে সত্তোর্ধ বয়সেও লিখেছেন অনেক। বয়সের ভারে ন্যুজ্জ হয়ে পড়লেও জীবনকে তিনি গুটিয়ে নেননি। এখনও বিচরণশীল। আকাঙ্খা তার তীব্র। তাই প্রবীণ বয়সেও তাকে সাহিত্যের গলিতে হাঁটতে দেখা যায়। কেন্দ্রে থাকলে তিনিও হয়তো দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ বা শাহেদ আলীর কাছাকাছি পৌঁছে যেতেন। তার আদর্শের অনুসারীরা নিস্পৃহ নির্বিকার না-হলে তিনিও পেয়ে যেতেন ‘বাঙলা একাডেমী পুরস্কার’ বা ‘একুশে পদক’। তার লিখিত বইয়ের সংখ্যা পঞ্চাশোর্ধ।
সিলেটের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য-সংস্কৃতি তার রচিত সাহিত্যের প্রধান উপজীব্য বিষয়। লোকজ ও মরমী ধারার এ লেখক———অল্প বয়সে পিতামাতাকে হারান। পারিবারিক ইতিবৃত্ত মতে তিনি হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর অন্যতম সহচর হযরত সৈয়দ নাসির উদ্দীন (রহ.)-এর অধস্তন বংশধর। মশহুর লেখক গবেষক ফজলুর রহমান তার পরিচয় তুলে ধরেছেন এভাবে :
‘মসাজানের সিংহ পুরুষ-সৈয়দ মোস্তফা কামাল
যেমন সুরত তেমন সীরত সুন্দর জামাল।
মানব সেবায় নিবেদিত প্রাণ-যার মহৎ হৃদয়
ঈমানও মজবুত তার অন্তরে দৃঢ় প্রত্যয়।
জালালাবাদের সাহিত্যাঙ্গনে স্বচ্ছন্দ বিচরণ
দিয়েছে তাকে খ্যাতি, করেছে সে সুনাম অর্জন।’
মাতৃপিতৃহারা সৈয়দ মোস্তফা কামাল অল্প বয়সে লেখার জগতে প্রবেশ করে লিখেছেন উন্মাদের মতো, পোর মতো চষে বেড়িয়েছেন সাহিত্যের প্রতিটি অঙ্গনে শাখা প্রশাখায়। তার রচিত সাহিত্য ভান্ডার বিচিত্র, নানা বৈচিত্রে সমৃদ্ধ ভরপুর। তার সৃজনীশক্তি মোহমুক্ত, সত্যের আলোকে আসক্ত। সৃজনশীলতা, মননশীলতা তার সাহিত্যের বৈশিষ্ট্য। তিনি এক সুমহান ঐতিহ্যের ধারক, সাহিত্যের কীর্তিমান সাধক, সৃজনশীল-মননশীল গবেষক।” (হারূন আকবর, সৈয়দ মোস্তফা কামাল : জাতি সত্তার শৈল্পিক কারিগর; সৈয়দ মোস্তফা কামাল সংবর্ধনা স্মারক, পৃ. ১৫-২৪, প্রকাশকাল ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯১২,সম্পাদনা পরিষদ) নিম্নে সংেেপ তাঁর জীবন ও কর্মের একটি বছরওয়ারী বিবরণ দেয়া হলো।

১৯৪৩ খৃ.    :    ২৫ জানুয়ারী হবিগঞ্জ সদরের মসাজানে জন্ম। পিতা সৈয়দ মছদ্দর আলী,মাতা সৈয়দা খোদেজা খাতুন। তিনি সিলেট ও তরপ বিজয়ী সৈয়দ নাসির উদ্দীন’র অধ:স্থন বংশধর।
১৯৪৩ খৃ. : থেকে ১৯৪৮ খৃ. পর্যন্ত মা-বাবার আদরে আহাদে শৈশব কাটান।
১৯৪৮ খৃ.    :    মসাজান মসজিদে সকাল বেলার মক্তবে পড়া শুনার সূচনা।
১৯৫০ খৃ.    : স্থানীয় রাধানন্দ প্রাইমারী স্কুলে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হন।
১৯৫২ খৃ.    : স্থানীয় রাধানন্দ প্রাইমারী স্কুল থেকে তৃতীয় মান পরীায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৫৪ খৃ.    :    স্থানীয় রাধানন্দ প্রাইমারী স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণীর  পরীায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৫৫ খৃ.    :    স্থানীয় সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হন।
১৯৫৬ খৃ.    :    মা সৈয়দা  খোদেজা খাতুন ইন্তেকাল করেন।
১৯৫৭ খৃ.    :    জানুয়ারী, বাবা সৈয়দ  মছদ্দর আলী ইন্তেকাল করেন। এ বছরই সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে  ৮ম শ্রেণীর পরীায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৫৮ খৃ.    :    ৫৮-৬০ খৃ. পর্যন্ত মা-বাবার অবর্তমানে লেখা পড়ায় বিঘœ ও বিরতি ঘটে ।
১৯৬১ খৃ.    :    সিলেটের দাড়িয়াপাড়াস্থ রসময় উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হন।
১৯৬৩ খৃ.    :    সিলেটের রসময় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি পরীায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৬৩ খৃ.    :    ১. সিলেট এম সি কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে  ভর্তি হন।
২. ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত হন এবং ছাত্রলীগের সাথে জড়িয়ে পড়েন।
১৯৬৪ খৃ.    :    ১. এম সি কলেজের বাংলা বিভাগ থেকে প্রকাশিত বার্ষিকী সম্পাদনা করেন।
২. সাহিত্য ম্যগাজিন উষসী সম্পাদনা করেন।
১৯৬৫ খৃ.    :    ১. সিলেট এম সি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট  (আই এ ) পাশ করেন।
২. ছাত্রলীগ থেকে ৬৫-৬৬ মেয়াদের জন্য সিলেট এম সি কলেজ ছাত্র সংসদের জি,এস নির্বাচিত হন।
৩. প্রথম নাটক কৈলাশ সমাচার প্রকাশ।
৪. জিহাদে পাকিস্থান গ্রন্থ প্রকাশ (তখন ভারত পাকিস্থান যুদ্ধ চলছিল)
৫. প্রথম রম্যরচনা রঙ্গের বিবি প্রকাশ করেন।
১৯৬৬ খৃ.    :    ১. ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান বিরোধী গণ আন্দোলনে যুক্ত হন। ৮ আগস্ট সিলেট সার্কিট হাউজের মার্চ পোষ্টে ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানকে গার্ড অব অনার প্রদান অবস্থায় কিং ব্রীজের উপর থেকে জন ঘৃণার প্রতীক স্বরূপ জুতা নিপে করেন। এবং তৎকালীণ সরকারের রোষানলে পড়ে ফেরারি হয়ে যান।
২. ফলে লেখা-পড়ায় বিরতি। দ্বিতীয় রম্যরচনা নবরঙ্গ রচনা ও প্রকাশ।
৩. ফেব্র“য়ারীতে সহকারী শিক হিসেবে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানার রাজারবাজার হাইস্কুলে যোগদান করেন।
১৯৬৭ খৃ.    :    ২৭ নভেম্বর, হবিগঞ্জ  জেলার চুনারুঘাট থানার বাগাডুবী গ্রামের বেগম ফাতেমা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
১৯৬৯ খৃ.    :    গণ আন্দোলনে যুক্ত হন এবং ভূমিকা রাখেন।
১৯৭০ খৃ.    :    সাধারণ নির্বাচনে মরহুম কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরীর নির্বাচনী প্রচারনায় ভূমিকা রাখেন।
১৯৭১ খৃ.    :    ১. ৫ জানুয়ারী, প্রথম সন্তান সৈয়দা রোমেনা মোস্তফা লিপি’র জন্ম হয়।
২. সিলেট এম সি কলেজ থেকে প্রাইভেটে বি এ  পাশ করেন।
৩. এ বছরের মার্চে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। তিনি স্ত্রী সন্তান নিয়ে বাড়িতেই অবস্থান করেন।
১৯৭২ খৃ. : স্বাধীনতার পর পুনরায় স্কুল চালু হলে পুরোদমে শিকতা শুরু করেন।
১৯৭৩ খৃ.    :    দ্বিতীয় সন্তান সৈয়দ মোস্তফা মন্জুর’র জন্ম হয়।
১৯৭৪ খৃ.    :    ১. প্রথম পুঁথিকাব্য রিলিফ বন্ঠন রচনা ও প্রকাশ।
২. তৃতীয় সন্তান সৈয়দা রুখসানা মোস্তফার জন্ম হয়।
১৯৭৫ খৃ.    :    কুমিল্লা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বি এড ডিগ্রী অর্জন করেন।
১৯৭৬ খৃ.    :    চতুর্থ সন্তান সৈয়দ মোস্তফা মোমেন’র জন্ম হয়।
১৯৭৭ খৃ.    :    ২রা অক্টোবর; কল্যাণব্রতের কবি আফজাল চৌধুরীকে সৈয়দ মোস্তফা কামাল’র নেতৃত্বে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থানার রাজারবাজারে এক গণ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এবং এ উপলে প্রকাশিত‘ কবি আফজাল চৌধুরী সংবর্ধনা স্মারক গ্রন্থ’ সম্পাদনা করেন তিনি।
১৯৮০ খৃ.    :    দ্বিতীয় নাটক গ্রন্থ তরপ বিজয় রচনা ও প্রকাশ করেন।
১৯৮২ খৃ.    :    ১. ৪ঠা জানুয়ারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’র সিলেট সংস্কৃতিক কেন্দ্রে ডেপুটেশনে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। এবং ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ৯ মে ১৯৯৫ খৃ. পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে।
২. ১৬ মে; সৈয়দ মোস্তফা কামাল’র নেতৃত্বে ঐতিহ্যর বিবেকী কন্ঠ খ্যাত সু-সাহিত্যিক ভাষা  সৈনিক মুসলিম চৌধুরীকে  সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। ‘ঐতিহ্যর বিবেকী কন্ঠ’ শীরোনামে মূলপ্রবন্ধ লিখেন আব্দুল হামিদ মানিক। প্রকাশক সৈয়দ মোস্তফা কামাল।
৩. জগন্নাথপুর থানার কুবাজপুর যুব সংঘ কর্তৃক শিবগঞ্জ বাজারে সৈয়দ মোস্তফা কামালকে গণসংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এতে সাহিত্যভূষণ চৌধুরী গোলাম আকবর প্রধান অথিতি ছিলেন এবং বাউল আব্দুল করিম গান শুনান। এ উপলে সৈয়দ মোস্তফা কামাল’র জীবন ও সাহিত্য কর্মের উপর একশ’ পৃষ্ঠার একটি স্মারক গ্রন্থ  প্রকাশিত হয়, সম্পাদনা করেন কবি নূর-ই সাত্তার। মূলপ্রবন্ধ পাঠ করেন আব্দুল হামিদ মানিক।
৪. ‘সিলেটের মরমী সাহিত্যের অব্যাহত ধারা’ গ্রন্থ সম্পাদনা করেন।
১৯৮৪ খৃ.    :    সৌদী আরব সফর করেন, এবং হজ্জ ও ওমরা আদায় করেন।
১৯৮৫ খৃ.    :    ভাষা আন্দোলনে সিলেটের অবদান (সেমিনার স্মারক ) সম্পাদনা করেন।
১৯৮৮ খৃ.    :    ১. ‘ঐতিহ্যের সোনালী অধ্যায় : সিলেটের লোক সাহিত্য প্রসংগ’ নামক গবেষণা গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ করেন।
২. দ্বিতীয় পুঁতিকাব্য ‘ছিলট বিবি’র রচনা ও প্রকাশ করেন।
৩. ‘মহাকবি সৈয়দ সুলতান সাহিত্য ও গবেষণা স্মারক’ গ্রন্থ সম্পাদনা করেন।
১৯৮৯ খৃ.    :    ১. বাংলাদেশ ন্যাশনাল স্টুডেন্ট এ্যওয়ার্ড লন্ডন সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেন।
২. মৌলভীবাজার পৌরসভা কর্তৃক (তৎকালীন পৌর চেয়ারম্যন সৈয়দ মহসিন আলী প্রদ্ত্ব) সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেন।
৩. ‘স্মৃতি অম্লান : চৌধুরী গোলাম আকবর  সাহিত্য ভূষণ স্মারক’’ গ্রন্থ সম্পাদনা করেন।
৪. ১৬ আগস্ট; ইন্টারন্যাশনাল বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার, ক্যমব্রীজ ইংল’র ওয়ার্ল্ড এ্যওয়ার্ড  ডিকশনারীতে জীবনী অন্তর্ভূক্ত হয়।
১৯৯০ খৃ. : ১. অক্টোবর ৫, এডভোকেট মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী (সাবেক এমপি)’র সাথে প্রথমা কন্যা সৈয়দা রোমেনা মোস্তফা লিপি’র  বিয়ে সম্পাদন করেন।
২. ২২ নভেম্বর, এক মর্মাস্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজে অধ্যয়নরত প্রথম পুত্র সৈয়দ মোস্তফা মন্জূর ইন্তেকাল করেন।
১৯৯১ খৃ.    :    ১. ‘বাংলার আধ্যাতিœক রাজধানী’ নামক গবেষণা গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ করেন।
২. জালালাবাদ যুব ফোরাম কর্তৃক সাহিত্যে অমর একুশে পদক লাভ করেন।
১৯৯২ খৃ.    :    ১. ‘হবিগঞ্জের মুসলিম মানস’ নামক গবেষণা গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ করেন।
২. নন্দলাল শর্মা সম্পাদিত বাংলা একাডেমী প্রকাশিত  মরমী কবি শিতালং শাহ র. গ্রন্থে তাঁর দুটি প্রবন্ধ
অন্তর্ভূক্ত হয়।
৩. নন্দলাল শর্মা রচিত হবিগঞ্জের সাহিত্যাঙ্গন এ তাঁর জীবনী ও সাহিত্য কর্ম অন্তর্ভূক্ত হয়।
১৯৯৩ খৃ.    :    ‘স্মৃতি বিস্মৃতির জাগ্রত অতীত’ নামক আতœজৈবনিক গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
১৯৯৪ খৃ.    :    ‘সিলেট বিভাগের শিা দীা ঐতিহ্য উত্তরাধিকার’ নমক গবেষণা গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
১৯৯৫ খৃ.    :    ১. ‘হজ্জ ওমরা ও যিয়ারত : মক্কা মদীনার পথে প্রান্তরে’ নামক গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
২. ‘হবিগঞ্জ পরিক্রমা’ নামক ইতিহাস গ্রন্থ যৌথভাবে সম্পাদনা করেন।
৩. হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন কর্তৃক জাতীয় গ্রন্থ সাপ্তাহ উপলে সাহিত্য পুরষ্কার ও সংবর্ধনা লাভ করেন।
৪. সিপাহসালার সৈয়দ নাছির উদ্দীন উদ্দীন রহ. হিফজুল কুরআন মাদরাসা, বগাডুপি, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৯৬ খৃ.    :    ১. কর্মবীর আমীনুর রশীদ চৌধুরী’র জীবনী গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ। এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কবি রাগিব হোসেন চৌধুরী
২. বি এন এস এ (লন্ডন ) এ্যওয়ার্ড লাভ করেন।
৩. ‘আমার রচনা পরিচয়’  (৬ষ্ঠ শ্রেণীর পাঠ্য পুস্তক ) রচনা ও প্রকাশ করেন।
৪. ‘সুরময় ভুবনে ছয় মরমী কবি’ গবেষণা গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ করেন।
৫. দি আমেরিকান বায়োগ্রাফিক্যাল ইন্সটিটিউট রির্সাচ এসোসিয়েশন, নর্থ ক্যালোরিনা যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ম্যন অব দ্যা ডিকেট হিসেবে সনদ প্রাপ্তি।
৬. ৩রা জানুয়ারী; ইসলামিক ফাউন্ডেশ বাংলাদেশ’র সিলেট কর্যালয়ে উপ-পরিচালক এর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ৯ মে ১৯৯৯ খৃ. পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে।
১৯৯৭ খৃ.    :    ১. ক. ভাবনার বাতায়ন, খ. হাছন রাজার গান : গানের গুরুত্ব, ভাব ও ভাষা বিশ্লেষণ, গ.সূফী সাধক শিতালং শাহ; এ তিনটি গবেষণা গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
২. কঁচিকথা (শিশু পাঠ্য) বাংলাদেশ মাদ্রাসা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
৩. মহানবীর মু’জিযা নাামক সীরাত গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
৪. ইসলামিক ফাউন্ডেশ বাংলাদেশ প্রকাশিত ‘ইসলামী বিশ্বকোষ’ গ্রন্থের বিভিন্ন খন্ডে পচিশটিরও বেশি নিবন্ধে এবং দেওয়ান নুরুল আনোয়ার হোসেন চৌধুরী লিখিত ও বাংলা একাডেমী কর্তৃক ১৯৯৭ খৃ. প্রকাশিত জালালবাদের কথা গ্রন্থে ত্রিশটি স্থানে রেফারেন্স হিসেবে নাম উল্লেখ।
৫. সাহিত্য পুরষ্কার ঃ রোটারী কাব অব সেন্ট্রাল সিলেট এ্যওয়ার্ড-১৯৯৭ খৃ. লাভ করেন।
৬. অধ্যাপক আসাদ্দর আলী রচিত  ‘ময়মনসিংহ গীতিকা বনাম সিলেট গীতিকা’ গ্রন্থটি সৈয়দ মোস্তফা কামালকে উৎসর্গ করেন।
১৯৯৮ খৃ.    :    ১. ‘সিলেটের মরমী সাহিত্য’ নামক গবেষণা গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
২. জননেতা দেওয়ান ফরিদ গাজী, জীবনীগ্রন্থ যৌথভাবে সম্পাদনা করেন।
৩. স্মৃতি অমলিন : (মহীউদ্দিন মাসুম স্মৃতি স্মারক) সম্পাদনা করেন।
৪. বাংলা একাডেমী প্রকাশিত লেখক অভিধানের ২১৫ পৃ. জবিনী অন্তর্ভূক্ত হয়।
১৯৯৯ খৃ. :    ১. মহাকবি সৈয়দ সুলতান সাহিত্য ও গবেষণা পরিষদ স্মারক গ্রন্থ সম্পাদনা করেন।
২. দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ ও শাহেদ আলী (রাগীব-রাবেয়া সাহিত্য পুরষ্কার-১৯৯৮ খৃ.)    স্মারকগ্রন্থ সম্পাদনা করেন।
৩. কথা ও কাহিনী (প্রবন্ধ সংকলন) প্রকাশ।
৪. ফোকলোর চর্চায় সিলেট গ্রন্থে আলোচনা অন্তর্ভূক্ত।
৫. দেওয়ান নুরুল আনোয়ার হোসেন চৌধুরী তাঁর রচিত ‘বিচারপতি সৈয়দ এ.বি মাহমুদ হোসেন’ গ্রন্থটি তাঁেক উৎসর্গ করেন।
৬. গ্রেট বৃটেন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন-লন্ডন, সেঞ্চুরী এ্যওয়ার্ড লাভ করেন।
২০০০ খৃ.    :    ১. ‘দীনহীন ঃ ঐতিহ্য-উত্তরাধিকার’ নামক গবেষণা গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
২. একাডেমী অব বাংলা লিটারেচার ইউ.কে কর্তৃক ‘সাহিত্যাচার্য’ উপাধি লাভ (গবেষণায়) ও নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা পুরষ্কার গ্রহণ।
৩.    আল্- হেলাল সাহিত্য পুরষ্কার লাভ।
২০০১ খৃ. :    ১. সৈয়দ হাসান ইমাম হোসাইনী চিশতী ঃ সংবর্ধনা স্মারক-২০০১ খৃ. সম্পাদনা করেন।
২. ‘ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন : প্রবাসে স্বদেশ চিন্তা’ গ্রন্থ সম্পাদনা করেন।
৩. ‘মরমী কবি ইলিয়াছ উদ্দিন আহমদ’ জীবনীগ্রন্থ সম্পাদনা করেন।
৪. দেওয়ান নুরুল আনোয়ার হোসেন চৌধুরী তাঁর রচিত ‘শিকড়ের সন্ধানে ঃ শিলালিপি ও সনদে আমাদের সমাজচিত্র’ গ্রন্থটি তাঁকে উৎসর্গ করেন।
২০০২ খৃ.    :    ১. ‘দানবীর রাগীব আলী’ (মাটি ও মানুষের মিলন মেলায়) গ্রন্থ যৌথভাবে সম্পাদনা করেন।
২. আমেরিকা প্রবাসী নুরুল ইসলাম রচিত ‘প্রবাসে জাগ্রত বিবেক’ গ্রন্থ সমম্পাদনা করেন।
৩. রাগীব-রাবেয়া সাহিত্য পুরষ্কার লাভ।
৪. ড. মুমিনুল হক একাডেমী ইউ.কে কর্তৃক গবেষণার জন্য ‘মিলেনিয়াম এ্যওয়ার্ড’ ও ‘সাহিত্যরতœ’ উপাধি লাভ।
৫. জকিগঞ্জ লেখক পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ব এ্যওয়ার্ড লাভ।
৬. লাভলী চৌধুরী রচিত ‘মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন ও তার গীতি কবিতা’
গ্রন্থটি তাঁেক উৎসর্গ করেন।
৭. ৩১ শে ডিসেম্বর; ইসলামিক ফাউন্ডেশ বাংলাদেশ’র সিলেট কর্যালয়ে উপ-পরিচালক এর দায়িত্ব পুনরায় গ্রহণ করেন। ২১ জানুয়ারী ২০০৩ খৃ. পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে।
২০০৩ খৃ. :    ১. ‘সিলেটের রেফারেন্ডাম ও জনপ্রতিনিধি’ নামক গবেষণা গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
২. ‘সিলেটের গুণীজন’ গ্রন্থ সম্পাদনা। প্রধান সম্পাদক শেখ ফারুক আহমদ।
৩. মরমী কবি পীর মোহাম্মদ ইসকান্দর মিয়া (জীবনী স্মারক গ্রন্থ) সম্পাদনা করেন।
৪. মুফতী তাকী উসমানী রচিত ও মাওলানা শাহ নজরুল ইসলাম অনুদিত ‘ভাই ভাই হয়ে যাও’
গ্রন্থটি তাঁেক উৎসর্গ করা হয়।
২০০৪ খৃ.    :    ১.‘সিলেট বিভাগের শিাদীা ঃ ঐতিহ্য উত্তরাধিকার’ গবেষণা গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
২. ‘সিলেট বিভাগের পরিচিতি’ নামক ইতিহাস গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
৩. শায়খ তাজুল ইসলাম রচিত ও মাওলানা শাহ নজরুল ইসলাম সম্পাদিত ‘চলমান জালালাবাদ ঃ ইসলামী রেনেসাঁয় অনন্য যাঁরা’ গ্রন্থে জীবনী অন্তর্ভূক্ত হয়।
৪. তরফদার মুহাম্মদ ইসমাইল রচিত ‘সূফী দার্শনিক শেখ ভানু’ গ্রন্থটি তাঁেক উৎসর্গ করা হয়।
৫. রব্বানী চৌধুরী রচিত ‘সিলেট বিভাগের গবেষক ও গবেষনা’ গ্রন্থটি তাঁকে উৎসর্গ করেন।
৬. নন্দলাল শর্মা রচিত ‘নিশিতে যাইও ফুল বনে’ (হবিগঞ্জের মরমী সাধক ও বাউল কবি) গ্রন্থটি তাঁকে উৎসর্গ করেন।
৭. রুহুল ফারুক রচিত ‘ছাতকের ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ গ্রন্থটি তাঁকে উৎসর্গ করেন।
৮. এডভোকেট আবু আহমদ আব্দুল হাফিজ (জন্ম শতবার্ষিকী স্মারক গ্রন্থ) সম্পাদনা করেন।
২০০৫ খৃ.    :    ১. ‘অতীত দিনের সিলেট : তিন কৃতি পুরুষের স্মৃতির আয়নায়’ গবেষণা গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
২. ‘তরপের সংপ্তি ইতিবৃত্ত’ রচনা ও প্রকাশ।
৩. শেখ সাদীর র. অমর বাণী ঃ গুলিস্তাঁর গল্প রচনা ও প্রকাশ।
৪. ঢাকা সাহিত্য-সংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রকাশিত লেখক অভিধানের ৩১৪ পৃ. জীবনী অন্তর্ভূক্ত হয়।
৫. রব্বানী চৌধুরী রচিত ‘সিলেট বিভাগের গবেষক পরিচিতি’ গ্রন্থে জীবনী অন্তর্ভূক্ত হয়।
৬. তাঁর জীবন ও সাহিত্য কর্ম নিয়ে ড. মুমিনুল হক রচিত ১৮০ পৃষ্ঠার গ্রন্থ প্রকাশ।
৭. ৫ এপ্রিল; উজ্জীবন শিল্পীগোষ্ঠী, এনায়েতগঞ্জ, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ কর্তৃক  সংবর্ধনা পদক প্রদান।
৮. মহানগরী অব লন্ডন এ্যওয়ার্ড লাভ করেন।
৯. ‘রাহমাতুল্লিল আলামীন’ সীরাত গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
১০. সৈয়দ শাহ গিয়াস উদ্দীন রহ. হিফজুল কুরআন মাদরাসা, মসাজান হবিগঞ্জ প্রতিষ্ঠা করেন।
১১. কুতুবুল আওলিয়া খানকা শরীফ, বগাডুপি, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ প্রতিষ্ঠা করেন।
২০০৬ খৃ.    :    ১. কারামাত ঃ ৩৬০ আওলিয়া রচনা ও প্রকাশ।
২. এসো আগে পড়ি ( বর্ণ পরিচয় ) রচনা ও প্রকাশ।
৩. কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ, সিলেট প্রদত্ব সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেন।
২০০৭ খৃ.    : ১. দৈনিক সিলেটের ডাক ২২/৪/২০০৭, দৈনিক সিলেটের ডাক ৩০/১০/২০০৭ এবং দৈনিক জালালাবাদ ৬/৭/২০০৭ তাঁর জীবন ও কর্মের উপর সচিত্র প্রবন্ধ প্রকাশ করে। প্রবন্ধ লিখেন যথাক্রমে মাওলানা আব্দুল হান্নান তুরুকখুলী, সাংবাদিক আহমদ মারূফ ও সাংবাদিক শফিক আহমদ। এর আগে দৈনিক সিলেটের ডাক ও আল-ইসলাহ পত্রিকায় প্রবন্ধ লিখেন হারূন আকবর।
২০০৮ খৃ. :    ১. ‘সিলেট নগর ও বিভাগ পরিক্রমা’ গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
২. ‘বাংলার মুসলমানদের ধর্মীয় ও সামাজিক বিপর্যয়ের রঙ্গমঞ্চের অন্তরালে’ গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
৩. ‘হাছন রাজার মরমী মানস ও উত্তর পুরুষ’ গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
৪. ইসলামী সহিত্য পরিষদ সিলেট কর্তৃক প্রদত্ব সাহিত্য পুরষ্কার লাভ।
৫. মরমী কবি আনফর উল্লাহ স্মৃতি সাহিত্য পুরষ্কার লাভ।
৬. গোলাম মোস্তফা চৌধুরী একাডেমী বালাউট, জকিগঞ্জ কর্তৃক প্রদত্ব পুরষ্কার লাভ।
৭. হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ‘জনকল্যাণ সংস্থা’ কর্তৃক সংবর্ধনা ও পুরষ্কার লাভ।
৮. ২০ ডিসেম্বর; বাংলাদেশ লেখক ফোরাম-ঢাকা কর্তৃক শহীদ তিতুমীর জাতীয় পুরষ্কার
(স্বর্ণ পদক ও ক্রেস্ট ) লাভ করেন।
৯. দেওয়ান নুরুল আনোয়ার হোসেন চৌধুরী তাঁর রচিত ‘স্মৃতির ভুবনে’ গ্রন্থটি তাঁকে উৎসর্গ করেন।
২০০৯ খৃ.    : ১. ‘মুড়ারবন্দ দরগাহ শরীফ’ গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
২. ২১ জুন; সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীন’র. মিশন ঃ নরপতি, চুনারুঘাট-হবিগঞ্জ কর্তৃক প্রদত্ব    গুণীজন সংবর্ধনা ও পুরষ্কার লাভ।
৩. ১২ ডিসেম্বর; হবিগঞ্জ সদর উপজেলার মসাজান গ্রামবাসী কর্তৃক প্রদত্ব সংবর্ধনা ও পুরষ্কার লাভ করেন।
৪. গষেণার জন্য ভাষা সৈনিক সাহিত্যিক মতিন উদ্দিন আহমদ জাদুঘর, সিলেট কর্তৃক প্রদত্ব ‘সার্টিফিকেট অব এপ্রিসিয়েশন এ্যওয়ার্ড’ লাভ করেন।
৫. সিলেটের সাহিত্য ঃ স্রস্টা ও সৃস্টি গ্রন্থে তাঁর সম্পর্কে আলোচনা অন্তর্ভূক্ত হয়।
২০১০ খৃ.    :    ১. ‘প্রসংগ বিচিত্রা’ ( ইতিহাস ঐতিহ্য সাহিত্য সংস্কৃতিক জীবন) গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ করেন।
২. ‘দানবীর রাগীব আলীকে নিবেদিত কবিতা সংকলন’ গ্রন্থ যৌথভাবে সম্পাদনা করেন।
৩. দ্যা মেট্রোপলিটন এ্যওয়ার্ড ২০১০’ লাভ করেন।
৪. তাজুল ইসলাম ফয়েজ সম্পাদিত সৃজনশীল সাহিত্য সংস্কৃতি বিষয়ক সাময়িকী (৮ম সংখ্যা ২০১০ ) তাঁকে উৎসর্গ করা হয়।
২০১১ খৃ.    :    ১. ‘সিলেট বিভাগের ভৌগলিক ঐতিহাসিক রূপরেখা’ গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ।
২. ‘প্রাণের কথা গানে’ (দানবীর রাগীব আলীকে নিবেদিত গান) সংকলন গ্রন্থ সম্পাদনা করেন।
২০১২ খৃ.    :    ১. মরহুম আব্দুল ওয়াছ চৌধুরী স্মৃতি সাহিত্য পুরষ্কার লাভ।
২. ফজলুর রহমান জুয়েল রচিত ‘আরব দেশে ইংরেজ গোয়েন্দা’ তাঁকে উৎসর্গ করা হয়।
৩. ২৯ সেপ্টেম্বর সিলেটবাসীর প থেকে তাঁকে ভাষা সৈনিক অধ্য মাসউদ খানের নেতৃত্বেগণ সংবর্ধনা, পুরষ্কার পদক ও ক্রেস্ট দেয়া হয়। এবং এ উপলে ৪৪২ পৃষ্টার একটি সমৃদ্ধ স্মারক প্রকাশ করা হয়। স্মারক গ্রন্থটি যৌথভাবে সম্পাদনা করেন কবি রাগিব হোসেন চৌধুরী, মুহিত চেীধুরী, লাভলী চৌধুরী, মুকুল চৌধুরী, শাহ নজরুল ইসলাম, সেলিম আওয়াল, জাহেদুর রহমান চৌধুরী, নাজমূল আনসারী ও আব্দুল মুকিত অপি।
৪. অক্টেবরে সিলেট লেখক ফোরাম প্রদত্ব সংবর্ধনা ও সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেন।
২০১৩ খৃ. : ২৫ অক্টোবর দৈনিক ইনকেলাবের সাহিত্য পাতায় হারূন আকবর এর প্রবন্ধ সৈয়দ মোস্তফা কামাল : শিকড় সন্ধানী লেখক প্রকাশিত হয়।
ক্স    তাঁর শেষ ইচ্ছা ‘খাতেমা বিল্-খায়ের’ বা ঈমানের সাথে মৃত্যু।
ক্স    এ যাবৎ তাঁর রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থেও সংখ্যা ৬৩ টি।
ক্স    ১.গবেষণা ২২ টি, ২. নবী জীবনী ২ টি, ৩. জীবনী ১ টি, ৪. নাটক ২ টি,
৫. রম্য-রচনা ২ টি, ৬. পুঁতিকাব্য ৩ টি, ৭. আতœজৈবনিক ২টি, ৮. বিবিধ ৮ টি,
৯. সম্পাদনা ২৩ টি।
* পুরষ্কার, সম্মাননা, সংবর্ধনা ও স্বীকৃতি ৩৮ টি।
* তাঁেক উৎসর্গিত গ্রন্থ ১৫ টি। উল্লেখ্য যে সৈয়দ মোস্তফা কামালকে উৎসর্গ করা গ্রন্থগুলো কোনটা এককভাবে আবার কোনটা যৌথভাবে তাঁকে উৎসর্গ করা হয়েছে।
তিনি জালালাবাদ লোক সাহিত্য পরিষদ এর সভাপতি (২০০৭ থেকে অদ্যাবধি) সিলেট লেখক কাব এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি (১৯৯৪ খৃ.-থেকে অদ্যাবধি) কবি আফজাল চৌধুরী ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি (২০০৪ খৃ. থেকে অদ্যাবধি) এবং সিলেট সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি (২০০৭ থেকে অদ্যাবধি) এছাড়াও তিনি জালালাবাদ লেখক ফোরামের উপদেষ্টাসহ বহু শিা সাহিত্য ও সংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার উপদেষ্ঠা হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। সিলেটে সাহিত্য সংস্কৃতির সুতিকাগার কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাথে তাঁর বরাবরই নিবীড় সম্পর্ক ছিল। প্রখ্যাত এই জ্ঞানসাধক জীবনের শেষ বাঁকে উপনীত। আমাদের মালিক ও মুনিবের দরবারে বিনীত প্রার্থনা তিনি যেন তাঁেক সুস্থতা দান করেন। আর মৃত্যুকালে তাঁর প্রত্যাশা অনুযায়ী দৌলতে ঈমানের সাথে মৃত্যু নসীব করেন। আমীন

২৮ অক্টোবর ২০১৩, সোমবার, সিলেট।