৭ই জানুয়ারি ২০২৫
আল-কুরআন নামের প্রেক্ষাপট

পরম করুণাময় আল্লাহ তা'আলা যখন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম—এর প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করেন তখন মক্কার কাফির— মুশরিকরা কোমর বেঁধে নামে এর প্রতিরোধে। বিশ্বজাহানের প্রতিপালক মহান প্রভুর এই অবিনশ্বর চিরন্তন বাণী সম্ভার যেনো মানুষের কাছে পৌঁছতে না পারে সে জন্যে তারা সম্ভাব্য সকল পন্থা—ই অবলম্বন করে। তাদের সেই প্রতিরোধ প্রচেষ্টার কথা আল্লাহ তা'আলার ভাষায় বিধৃত হয়েছে এভাবে— "এ কুরআনের প্রতি তোমরা কর্ণপাত করো না; বরং (এর তিলাওয়াতের সময়) অনর্থক কথা বলে (তিলাওয়াত ব্যাহত করে)।" অর্থাৎ যখন হযরত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম—এর প্রতি পবিত্র কুরআনের কোনো আয়াত অবতীর্ণ হতো আর তিনি তা হৃদয়ঙ্গম করার লক্ষ্যে, বিশ্বময় সকলের কাছে তার পয়গাম পৌছে দেয়ার বিভাময় উদ্দেশ্যে বার—বার তিলাওয়াত করতেন; কিতাবুল্লাহ'র অলৌকিক ভাব ও ভাষার বর্ণনাতীত স্বাদ ও তৃপ্তিতে অবিরাম আহলাদিত— আমোদিত হতেন; হতেন মথিত—স্পন্দিত; তখন সেই অনুপম সুন্দর বাণী ও আহ্বান জ্ঞাতঅন্ধ কাফির গোষ্ঠীর অন্তরে সৃষ্টি করতো অসহ্য জ্বালা, প্রোজ্জ্বলিত করতো যুক্তিহীন প্রতিহিংসার বহ্নিশিখা। বেশামাল হয়ে পড়তো তারা পবিত্র কিতাবের প্রতিরোধে। আর স্বজাতি—স্বগোত্রকে আহ্বান করতো তারা যেনো এই বাণী কানে না তুলে, ভুলেও যেনো এর উচ্চারণ না করে। আঁধারচারী সত্যবিমুখ এই কাফিরগোষ্ঠীর অবাঞ্ছিত এই দুরাশার প্রতিবাদে আল্লাহ তা'আলা তাঁর সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ ঐশীগ্রন্থের নাম—ই রেখেছিলেন "আল—কুরআন" বা পঠিত গ্রন্থ। যার সারমর্ম হলো তোমরা চাও আমার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ বাণীর পঠন না হোক, আমার নির্বাচিত কালাম অনুচ্চারিত অপঠিত থাকুক। জেনে রেখো। আমার এই গ্রন্থ, আমার এই কালাম তা—কিয়ামত পঠিত হতে থাকবে। তাই এই কিতাবের নাম—ই দেয়া হলো 'কুরআন' বা পঠিত গ্রন্থ। মূলতঃ অধিকাংশ আলিমের মতে তপ্ত এই প্রতিরোধ অবস্থার প্রেক্ষিতেই এই মহাগ্রন্থকে "কুরআন" শব্দে নামকরণ করা হয়েছে।